সিত্রাংয়ের দাপট কোথায় বেশি হতে পারে, কেমন হবে ঝড়ের বেগ?

শনিবার তৈরি হবে নিম্নচাপ, রবিবার তা শক্তিশালী হবে। সোমবার তা পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এ। আমফানের পর ফের এক প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কায় দক্ষিণবঙ্গ। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হয়ে তা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগোতে পারে। অর্থাত্ এই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি প্রভাব পড়বে সুবন্দরবনের উপরে এবং তা অনেকটাই বেশি।

একসময় মনে করা হচ্ছিল ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার পর বোঝা যাবে তা প্রকৃতি। সময় যত এগিয়ে আসছে ততই সিত্রাংয়ের ভয়াবহতা ক্রমশ বাড়ছে। হাওয়া অফিসের আশঙ্কা, আন্দামান সাগরে যে নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছে সেটি আন্দামান সাগরেই অবস্থান করছে। আগামী ২২ তারিখ নাগাদ গভীর নিম্নচাপ, ২৩ তারিখ আরও ঘোরতর আকার নিয়ে এটি উত্তর দিকে বাঁক নিয়ে বাংলাদেশ ও সুন্দরবনের উপরে আছড়ে পড়তে পারে। এর প্রভাবে দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভবানা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

যেহেতু উত্তর বঙ্গোপসাগরের উপরে এই সিস্টেমটি থাকবে তাই দুই ২৪ পরগনা পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ২৪ তারিখ ৪৫-৫৫ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। পরদিন বাড়তে পারে ঝড়ের বেগ। আবহাওয়াবিদরা বলছেন ২৫ তারিখ অর্থাত্  মঙ্গলবার হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে ৯০-১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। কলকাতায় সোমবার হালকা বৃষ্টি, মঙ্গলবার বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। কলকাতা সংলগ্ন এলাকা হাওড়া,হুগলি এইসব জায়গায় হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।

সতর্কতা হিসাবে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যারা সমুদ্রে গিয়েছেন তাদের ফিরে আসতে বলা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়তে পারে সুন্দরবনের তাই তাই সুন্দরবনের ফেরি সার্ভিস নদীতে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সোম ও মঙ্গলবার।

আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কবার্তায় নড়েচড়ে বসেছে হাওড়া পুরসভা।সাইক্লোনের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা হাওড়াতে। সেই করণে আজজরুরী বৈঠক হয় পুরসভায়।হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মন্ডলী চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন এই সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে তারা একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছেন। অতি বর্ষণের ফলে শহরের নিচু এলাকাগুলিতে যাতে জল জমে না যায় তার জন্য সাতটি পাম্প হাউস খোলা রাখা হবে। মোট ৫৭ টি  পাম্প চালানোর পাশাপাশি নিচু এলাকার জন্য অতিরিক্ত সাতটি পাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিইএসসিকে বলা হয়েছে ঝড় বৃষ্টির সময় রাস্তার ধারে সব ত্রিফলা আলো বন্ধ রাখার জন্য। হাওড়া পুরসভায় ২৪ ঘন্টার জন্য খোলা হবে কন্ট্রোল রুম। সাফাই কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মী এবং মোটর ভেহিকেলস দপ্তরে কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও পুরসভার পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি স্কুলের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে যাতে বাসিন্দাদের নিরাপদে রাখা যায়। এর পাশাপাশি পানীয় জলের  পাউচ, শুকনো খাবার এবং ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুজয় চক্রবর্তী। জমা জল যাতে দ্রুত নেমে যায় তার জন্য পুরসভার এজেন্সিগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এর নম্বর  ৬২৯২২৩২৮৭০ / ৭১।

Source link

Leave a Comment