মমতার নির্দেশ; চাকরির জন্য কোনও সুপারিশ গ্রাহ্য হবে না, জানিয়ে দিলেন ব্রাত্য

 

এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে আদালতে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য দিয়েছে সিবিআই। যিনি শূন্য পেয়েছেন তার খাতায় ৫০ এর বেশি নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়েছে। যিনি কিছুই লেখেননি তাকেও জালিয়াতি করে পাস করানো হয়েছে। এরকম এক পরিস্থিতিতে সুপারিশে আর কোনও চাকরি নয়। এমনটাই জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বুধবার জি ২৪ ঘণ্টাকে ব্রাত্য বলেন, দলের নেত্রী ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বলেছেন, একটি সুপারিশও গ্রাহ্য় হবে না। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের প্রতিজ্ঞা।

 

বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যেসব তথ্য উঠে এসেছে তা মারাত্মক। ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেছেন, যারা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে চাকরি পেয়েছেন তারা নিজে থেকে চাকরি ছেড়ে দিন। তা নাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সিবিআইয়ের দাবি, মাত্রা ২-৩টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নবম থেকে দ্বাদশ, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডিতে চাকরি পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা মনে করছে আট হাজারের বেশি প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। ওইসব লোকজনের মধ্যে কারা সুপারিশ পত্র পেয়েছেন তাদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।

আগামী ১১ ডিসেম্বর টেট নেওয়া হবে। এনিয়ে আজ ব্রাত্য বসু বলেন, আমরা টেট নিচ্ছি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। এখনই আমরা টেট নিতে চাইনি। প্রাথমিক পর্যদের আধিকারিকরা বলেছিলেন এত তাড়াহুডে়া করে পরীক্ষা না নেওয়াই ভালো। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যেই টেট নিতে হবে। 

বুধবার হাইকোর্টে এসএসসি দুর্নীতি মামলার শুনানিতে জানিয়েছে, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এসএসসি সার্ভারে ৯০৭ জন প্রার্থীর নম্বর বদলানো হয়েছে। যারমধ্যে প্যানেলে নাম রয়েছে ৬৩১ জনের। ওদিকে নবম-দশম শ্রেণির ক্ষেত্রে ৯৫২ জনের নম্বর বদলানো হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে সমস্ত উত্তরপত্রের স্ক্যান করা কপি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রার্থী হয়তো আদতে ১ বা ০ পেয়েছেন। ফেল করেছেন! অথচ সার্ভারে ওই প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর দেখা যাচ্ছে ৫০ বা ৭০। এমনকি ফাঁকা ওএমআর শিট পর্যন্ত জমা দেওয়া হয়েছে! প্রার্থী কিছুই লেখেননি! যেখানে পরে ৫৩ নম্বর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বড়সড় তথ্যপ্রমাণ সামনে এল সিবিআই রিপোর্টে। 

জালিয়াতি করে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের কড়া হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন,’আমি এটা পরিষ্কার করে দিতে চাই যে, এই সমস্ত বেআইনি প্রার্থীরা তাঁদের চাকরি হারাবেন। যদি তাঁরা নিজে থেকে পদত্যাগ করেন তো ভালো, আদালত তাহলে কোনও পদক্ষেপ করবে না। কিন্তু যদি তাঁরা তা না করেন, তাহলে আদালত অন্যভাবে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। এই সকল প্রার্থীরা পদত্যাগ না করলে, পরবর্তীতে তাঁরা যেন আর কোনও সরকারি চাকরির পরীক্ষায় না বসতে পারেন, আমি সেই নির্দেশ দেব। পদত্যাগ না করলে তাঁরা কেউ অন্য সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। পদত্যাগ করলে বুঝব যে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন।’

Source link

Leave a Comment